ছেলেবেলায় ভোটের স্মৃতি।
ফিরোজ আলী কাঞ্চন
ভোট গনতান্ত্রিক দেশে নাগরীকদের অধিকার।ছেলে বেলায় অতো কিছু বুঝতাম না।ভোট এলেই যেন এক উৎসব,চারিদেকে সাজো সাজো রব।বিভিন্ন রঙিন পতাকায় ছেয়ে যেত গোটা গ্রাম।গ্রামের মাটির দেওয়াল গুলিতে দেওয়াল লেখন,কতো ছন্দ মিলিয়ে ছড়ার ছড়াছড়ি।আদুল গায়ে,গ্রামো আরো অনান্য বালকদের সজ্ঞে আমিও সে সব রং মাটির দেওয়াল থেকে আঙুল দিয়ে ঘষে তুলে কপালে টিপ পড়তাম,গোঁফ করতাম,একে অন্যকে সাজিয়ে দিতাম।
ভোটের দিন আরো মজা,স্কুল ছুটি।আমাদের গ্রামের প্রাইমারী স্কুলেই ভোট হ য়।আগের দিন ভোটকেন্দ্রে আসতেন ভোট কর্মীরা,সজ্ঞে পুলিশের আসা যাওয়া।পুলিশ বা জলপাই রংমেশানো সেনা দেখলেই ভয়ে সরে গিয়ে দূর থেকে অবাক চোখে দেখতাম।পরের দিন ভোট শুরু হলে গোটা গ্রাম সুতুলি দড়ি দিয়ে বিভিন্ন পতাকায় ছেয়ে যেত।রাস্তার ধারে ধারে একটা বাঁশের কঞ্চি থেকে শুধু পাতাগুলি ছাড়িয়ে বিভিন্ন শাখায় পতাকা আটকে সেই বাঁশ কে গেঁথে দেওয়া হতো,যেন পতাকার গাছ,ভোট শেষ হয়েগেলে সে সব ছিঁড়ে নিবার জন্য কতো হুড়োহুড়ি।
ভোটের দিন মা,দিদার সজ্ঞে সকাল সকাল স্নান করে নতুন জামা পড়ে ভোটের লাইনে গিয়ে দাঁড়াতাম।বুথের ভিতর প্রবেশ করে এক কোনে চুপটি করে দাঁড়িয়ে থাকতাম।দিদা অফিসারকে বলে আঙুলে লাগিয়ে দিতেন অমোচনীয় কালি, সে কি আনন্দ,বাইরে এসে বন্ধুদের দেখাতাম সেই কালি,'দেখ আমি ভোট দিয়েছি।'
সারাটা দিন টো টো করে ঘুরে বেড়াতাম এ পাড়া থেকে ও পাড়ায়,বভিন্ন খামারে চাটাই বা ত্রিপল বিছিয়ে বসে থাকতেন বিভিন্ন দলের লোকেরা,কোথাও চপ মুড়ি,কোথাও বা দানাদার। আমরা ছিলাম সব দলের,পাড়ার স ম্পর্কে কেউ কাকা,কেউ কারো জ্যাঠা বা দাদু।ফলে সে চপ মুড়ি বা সামান্য দানাদার প্রাপ্তি যেন অমৃত।
আজ আর সে ছোটটি নেই,বড়ো হয়ে আমাদের মন নিজেদের অজান্তেই যেন হয়ে গেছে সংর্কীণ।রাজ্য সরকারী কর্মচারী হয়ে এখন ভোট করাতে যেতে হয়।সব গ্রামের পরিবেশ আর এক রকম নয়,ফলে স্বাভাবিক ভাবে থেকে যায় একটা চাপা দুঃশ্চিন্তা,তার উপর আবার প্রাইজিং অফিসারের দায়ীত্ব,তবে আমার ভোট কেন্দ্রে যখম মা দিদার হাত ধরে কোন বালক বা বালিকা আসে,তখন মনে পড়ে যায় আমার সেই ছেলে বেলাকার কথা,মজা করে জিজ্ঞেস করি, ' কি রে,ভোট দিবি নাকি? 'ওর মা বাবার অনুরোধে সজ্ঞে সজ্ঞে দায়ীত্ব প্রাপ্ত অফিসারকে বলি,' দিন দিন,ওর আঙুলেও একটু কালি লাগিয়ে দিন।"
ভোট আসে,ভোট যায়; ভোট এলেই মনের মধ্যে উঁকি দেয় ছেলেবেলার সেই দিন গুলো।তবে এখন গ্রাম বাংলার রাজনীতির ধরন পাল্টাচ্ছে,ভোট এলেই লাঠা-লাঠি,ফাটা-ফাটি;দাজ্ঞা,বো
No comments:
Post a Comment