Thursday, April 18, 2019

মহাভারত প্রথম ইংরাজীতে প্রকাশ করেন সাঁকোর প্রতাপচন্দ্র রায়।

                  ফিরোজআলী কাঞ্চন

         গলসি  অঞ্চলের এক প্রাচীন গ্রাম সাঁকো,মুকুন্দরামের চণ্ডীমঙ্গল কাব্যে  গ্রামটির নাম পাওয়া যায়,গ্রামে আছে সূর্য দেবতা ঊসাদিত্যের মন্দির।এই গ্রামে ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের ১৫মার্চ  জন্ম গ্রহণ করেন মহাভারতের প্রথম ইংরাজী প্রকাশক শ্রদ্ধেয় প্রতাপচন্দ্র রায়।পিতা রামজয় রায়।দরিদ্র পরিবারে অভাব নিত্যদিনের। ভাগ্যের সন্ধানে তিনি কলকাতায় কালীপ্রসন্ন সিংহের বাড়িতে সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।কিন্তু  কালীপ্রসন্ন সিংহের মৃত্যু তাঁকে অসহায় করে দেয়,খুলে বসললেন বই খাতার দোকান
 কালীপ্রসন্ন সিংহের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার ইচ্ছা,স্থির করলেন তিনি নিজেও মহাভারত ছেপে প্রকাশ করবেন।১৮৬৯খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে প্রকাশ পেল মহাভারতের প্রথম পর্ব,তিন হাজার কপি ছাপা হলো,প্রতি কপির দাম রাখা হলো বিয়াল্লিশ টাকা।কিন্তু তখনকার দিনে বিয়াল্লিশ টাকাদিয়ে মহাভারত কেনার সামর্থ সাধার মানুষের ছিল না,তাই তিনি সমস্ত ছাপা গ্রন্থ বিনা পয়সায় বিলিয়ে দিলেন
       প্রতাপচন্দ্র টানা বারো বছর ধরে একের পর এক মহাভারতের ৯৪টি ইংরাজী অনুবাদ খণ্ড প্রকাশ করলেন,ইচ্ছে তা ১০০তে নিয়ে যাওয়া।সে স্বপ্ন আর পূরণ হলো না,১৮৯৫খ্রিষ্টাব্দের ১০ জানুয়ারী মৃত্যু হলো প্রতাপচন্দ্র রায়ের।
             স্বামীর মৃত্যুশয্যায় সুন্দরীবালাদাসী কথা দিয়েছিলেন তিনি মহাভারতের ইংরাজী অনুবাদের ১০০পর্ব প্রকাশ করে স্বামীর শেষ ইচ্ছা পূর্ণ কবেন,তিনি সে কথা রাখলেন।সুন্দরী বালা দাসীও দেশ বিদেশে প্রশংসিত হলেন।তিনি স্বামীর জন্মস্থান সাঁকোগ্রামে প্রতাপচন্দ্রের প্রথমা পত্নী স্বর্গীয়া গোলাপী সুন্দরী দাসীর অক্ষয় স্বর্গার্থে প্রতাপেশ্বর শিব মন্দির প্রতিষ্ঠা করে দেন ও একটি জলাশয় খনন করে দেন।
(ছবিতে সাঁকো গ্রামে  সুন্দরীবালা দাসী প্রতিষ্ঠিত মন্দির,গলসি,পূর্ব বর্ধমান)
লেখা ও ছবি-ফিরোজ আলী কাঞ্চন।।

No comments:

Post a Comment